sayeed

যশোর হাসপাতালে এইচআইভি আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচার



 
পিকে ডেস্ক :

মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে অবশেষে এইচআইভি আক্রান্ত সেই অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচারের (প্রসব) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। গাইনি বিভাগের তিনজন চিকিৎসকের একটি দল অস্ত্রোপচারে অংশ নিয়েছে।

জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক হোসাইন সাফায়েত বলেন, সংক্রমণ ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনায় এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই হাসপাতালের চারটি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) কক্ষের একটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য সাধারণ অস্ত্রোপচার আজ বন্ধ রাখা হয়েছে। গাইনিসহ জরুরি অস্ত্রোপচার অপর তিনটি ওটি কক্ষে করা হবে।

এই রোগীর চিকিৎসা নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবাদানকারীরা দ্বিধা-বিভক্তিতে পড়েন। একদিকে অন্তঃসত্ত্বার চিকিৎসাপ্রাপ্তির মানবিক চাহিদা; অন্যদিকে অন্য রোগীদের সংক্রমণ ঝুঁকি ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-নার্সদের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত।

যশোর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও গাইনি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানান, মাস তিনেক আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এই নারীর দেহে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তখন তিনি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এখন এই নারীর অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু এইডসে আক্রান্ত এই রোগীর অস্ত্রোপচার এই হাসপাতালে করা হলে পরবর্তী তিন দিন অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। এ নিয়ে অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন অন্তঃসত্ত্বা সন্তান প্রসব করেন। এ ছাড়া অন্যান্য অস্ত্রোপচার করা হয় আরও ১৫ থেকে ২০টি।

হাসপাতালের চিকিৎসকসহ একাংশের দাবি ছিল, এইডসে আক্রান্ত প্রসূতিকে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করে উন্নত সেবার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ঢাকায় তাঁকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো বিশেষায়িত হাসপাতাল আছে।

জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বজলুর রশিদ টুলু বলেন, ‘অস্ত্রোপচারটি বিশেষায়িত হাসপাতালে করতে পারলে বেশি ভালো হতো। কিন্তু প্রসূতি আর্থিকভাবে দরিদ্র। ওই চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার সামর্থ্য নেই। যে কারণে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা ছাড়া এই হাসপাতালে এর আগে এ রকম একজন রোগীর অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাসপাতালে সে ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা আছে।

তত্ত্বাবধায়ক হোসাইন সাফায়েত বলেন, ‘আমাদের তো অস্ত্রোপচার করতে সমস্যা নাই। সমস্যা হচ্ছে জায়গা নেই। এই হাসপাতালে পাঁচ শতাধিক রোগী রাখতে হচ্ছে। হাসপাতালে কেবিনের তীব্র সংকট আছে। এইচআইভি সংক্রমণ রোগীকে এমন জনাকীর্ণ হাসপাতালে রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কেবিন ছাড়া তাঁকে রাখাও যাবে না। কিন্তু ওই কেবিন সংকটের কারণে অস্ত্রোপচারে বিলম্ব হচ্ছিল।’এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার জন্য খুলনা বিভাগে একটি বিশেষায়িত কেন্দ্র থাকা প্রয়োজন বলেও তিনি জানান।

প্রাণের খুলনা/এমএন

Comments

sayeed

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ