এম এন আলী শিপলু
গেল বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ প্রাপ্তির পর খুলনা রেলওয়ের জমি দখল ও চাঁদাবাজি নতুন মাত্রা পেয়েছে। শুধু দখল নয়, প্লট আকারে বিক্রিও চলছে সরকারি এসব জমি। ইতোমধ্যেই পানি ভর্তি ডোবা ভরাট করে ঘর তুলেছেন অনেক ক্রেতা। একই সঙ্গে অন্যের ঘর দখল করে ভাড়া দেওয়া ও নিয়মিত চাঁদা আদায়ের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
জোড়াগেটস্থ মন্টুর কলোনি এলাকায় (মৌজা: বানিয়া খামার, জে এল নং–৩, দাগ ১৫০১) চলছে এ অবৈধ বাণিজ্য। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৩০ থেকে ৪০ হাত পরিমাণ প্রতিটি প্লট মাত্র ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় জাহিদুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও আলমগীর তিনটি প্লট দখল করেছেন। রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কথিত বিক্রেতাদের কাছে তারা টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি কারও কাছে টাকা দেননি। পুকুর আকারে থাকা রেলের জমি ভরাট করে সেখানে বসবাস শুরু করেছেন। প্রয়োজনে জমি ছেড়ে দেবেন বলেও জানান তিনি। যদিও মনির খান, রবি ও হেলাল নামের বিএনপি–যুবদল সংশ্লিষ্টরা তাকে এ কাজে উৎসাহিত করেছেন বলে স্বীকার করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপি ইউনিট কমিটির সভাপতি আব্বাস ও সেক্রেটারি হায়দারের অফিস ঘিরে চলছে এই অবৈধ কার্যক্রম। তাদের সাথে সদর থানা বিএনপির সদস্য মনির খান ওরফে মইন্না, ২১ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রবি ওরফে ফর্মা রবি এবং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. হেলাল সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত।এলাকায় আরও দখল হয়ে গেছে স্থানীয় ইউনুসের গ্যারেজ, রশিদের দোকান, আলামিনের হোটেল, জব্বার কমান্ডারের দোকান ও বিভিন্ন আড়ৎ। এসব থেকে মাসে মোটা অঙ্কের চাঁদা তোলা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক কাউন্সিলর স্বপনের ঘনিষ্ঠ আব্দুল জব্বার ওরফে জব্বার কমান্ডারের স্ত্রী ফিরোজা বেগমের কাছ থেকেও এক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। যুবলীগের একাধিক নেতার কাছ থেকেও চাঁদা নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে অভিযুক্ত মনির খান, রবি ও হেলাল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তারা এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না। যদিও তারা স্বীকার করেছেন, রেলের জমি বহু মানুষ দখল করে বসবাস করছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ের খুলনা ফিল্ড কর্মকর্তা (কানুনগো) মো. শহিদুজ্জামান বলেন, প্লট আকারে জমি বিক্রির বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন এবং প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।জমি দখল, প্লট বিক্রি আর চাঁদাবাজিতে রেলের সম্পদ হুমকির মুখে পড়লেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এ অপকর্ম চলছেই।
Comments
Post a Comment